প্রকাশিত: Sun, Aug 13, 2023 11:00 PM
আপডেট: Mon, Jun 30, 2025 6:07 AM

[১]জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বন্ধে আলেম-ওলামাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

ইকবাল খান: [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘আমরা কুসংস্কার, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে আপনাদের (আলেম-ওলামাদের) সহযোগিতা চাই।’ সূত্র: বাসস।

[৩] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা-২০২৩-এর জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ী হাফেজগণের মধ্যে পুরস্কার বিতরণকালে আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের সকলকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি যাতে আমাদের সন্তানরা বিপথে যেতে না পারে।’ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

[৪] প্রধানমন্ত্রী আলেম-ওলামাদেরকে সকলের মাঝে ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী ছড়িয়ে দিতে বলেন, যাতে কেউ কাউকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের পথে বিচ্যুত করতে না পারে  এবং ইসলামের বদনাম করতে না পারে। কেননা ইসলাম পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং সর্বদা শান্তির কথা বলে।

[৫] তিনি বলেন, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম, সেই ধর্মের সঙ্গে সামান্য মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য কেন সন্ত্রাসী নামটা যুক্ত হবে?  সত্যিকারের যারা ধর্মে বিশ্বাসী তাদের জন্য এটা খুব কষ্টদায়ক। কাজেই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, এই সমস্ত কুসংস্কার, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলের ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনাদের দোয়া চাই এবং আমাদের ছেলে মেয়েরা যেন বিপথে না যায় সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।

[৭] কোমলমতি শিশু-কিশোরদের সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ থেকে দূরে রাখতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সুইসাইড (আত্মহত্যা) করে মানুষ হত্যা করে কোন বেহেশতে যাচ্ছে তারা। এই বিপথ থেকে তাদের সরাতে হবে। এটা একটা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ইসলাম ধর্মের নামে বদনাম দেওয়া হয়। এই বদনামের হাত থেকে ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।

[৮] অনুষ্ঠানে বিজয়ী ৫ জন হাফেজের হাতে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, নগদ অর্থের চেক এবং সনদ তুলে দেন। তারা হচ্ছেন- প্রথম হাফেজ আফফান বিন সিরাজ, দ্বিতীয় হাফেজ মো. ওসমান গণি, তৃতীয়  হাফেজ মো. আবু জাফর শাকিল (দৃষ্টি প্রতিবন্ধি), চতুর্থ হাফেজ মো. খালিদ সাইফুল্লাহ এবং পঞ্চম হাফেজ মো. মোতাসিম বিল্লাহ।

[৯] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু.আ. হামিদ জমাদ্দার, বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক মাওলানা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। যার মধ্যে রয়েছেন আলহাজ্ব সুফী মো. মিজানুর রহমান এবং হযরত মাওলানা সালাউদ্দিন নানোপুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশের দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আবুল কালাম আজাদ।

[১০] প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের এ দেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন এবং আজকে আমরা বিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছি সে মর্যাদা নিয়েই মাথা উঁচু করে আমরা চলতে চাই। 

[১১] তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন খাঁটি মুসলমান। তিনি যেমন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি তেমনি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামের প্রচার-প্রসারের স্থপতিও তিনি। বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মাদ্রাসা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন।

[১৩] প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা তাবলীগ জামাতের জন্য কাকরাইল মসজিদে জমি দান করেন। টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার জন্য জায়গা বরাদ্দ দেন। জামিয়া মাদানিয়া দারুল উলুম যাত্রাবাড়ী কওমী মাদ্রাসা জন্যও জমি প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান শুরু ও সমাপ্তিতে কুরআন তেলাওয়াতের প্রচলন করেন এবং আইন করে মদ নিষিদ্ধ করেন এবং ঘোড়দৌড় ও জুয়া বন্ধ করেন। 

 [১৪] সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ৫৬৪টি মডেল মসজিদ কাম ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। এই মসজিদ কমপ্লেক্সে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিস, মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষ, মুসলিম পর্যটক ও মেহমানদের বিশ্রামাগার, ইসলামী লাইব্রেরি, হজ প্রশিক্ষণ ও ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে।